ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফর: সৌদি, কাতার ও আমিরাতের সঙ্গে নতুন সম্পর্কের রূপরেখা

 মধ্যপ্রাচ্যে যখন উত্তেজনা ও সংঘাত ক্রমেই বাড়ছে, ঠিক তখনই সৌদি আরব, কাতার, ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে যাচ্ছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই সফরকে ঘিরে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক আলোচনা, রাজনৈতিক বিশ্লেষণ এবং অর্থনৈতিক প্রত্যাশার হিসাব-নিকাশ। 

বিশ্লেষকদের মতে, এই তিন ধনী উপসাগরীয় দেশ ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে নিরাপত্তা, প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিক প্রভাব বৃদ্ধিতে আগ্রহী। সফরের প্রতিটি পর্যায়ে আলাদা করে বিভিন্ন চুক্তির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।



সৌদি আরব সফর: নতুন বিনিয়োগ ও নিরাপত্তা চুক্তির আভাস

ট্রাম্পের সফরের প্রথম গন্তব্য সৌদি আরব। রাজধানী রিয়াদে অনুষ্ঠিতব্য উপসাগরীয়-মার্কিন সম্মেলনে অংশ নেবেন তিনি। কয়েকটি সূত্রে জানা গেছে, ট্রাম্প ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে পারেন, যা হামাস ছাড়া ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের পথ খুলে দিতে পারে। 

সৌদি আরব চায়:

মার্কিন সামরিক নিরাপত্তা চুক্তি 

বেসামরিক পারমাণবিক প্রকল্পে যুক্তরাষ্ট্রের অনুমোদন 

উচ্চমূল্যের অস্ত্র চুক্তি এবং বিনিময়ে ৬০০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি

তবে ট্রাম্প যদি তেলের দাম কমিয়ে রাখার চাপ বাড়ান, তাহলে এই চুক্তি জটিল হয়ে উঠতে পারে।

কাতার সফর: সামরিক ঘাঁটি ও বিমানের উপহার

আল-উদাইদ ঘাঁটি যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটি, যেটি কাতারে অবস্থিত। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতি আরও বাড়ানোর জন্য নতুন চুক্তি হয়েছে।

কাতার চায় সিরিয়ার উপর থাকা "Caesar Act" নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার 

ট্রাম্প প্রশাসন কাতারের রাজপরিবারের পক্ষ থেকে উপহারস্বরূপ একটি Boeing 747-8 বিমান গ্রহণ করতে যাচ্ছে, যার মূল্য প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার

এই বিমানটি ভবিষ্যতে ট্রাম্পের প্রেসিডেনশিয়াল লাইব্রেরিতে দান করা হবে।


আমিরাত সফর: প্রযুক্তি, চিপ এবং কূটনৈতিক শক্তি

সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে ট্রাম্পের আলোচনায় আসছে:

  •  এআই ও সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে বৈশ্বিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা 
  • ১.৪ ট্রিলিয়ন ডলারের মার্কিন বিনিয়োগ পরিকল্পনা 

তবে বাইডেন প্রশাসনের চিপ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা এখন বড় বাধা। এই সফরে যদি ট্রাম্প সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে পারেন, তবে এটি হবে আমিরাতের জন্য কূটনৈতিক বিজয়।

মধ্যপ্রাচ্যের জটিল ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতার মধ্যে ট্রাম্পের এই সফর নতুন একটি অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে। সৌদি আরব, কাতার ও আমিরাত—তিন দেশই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতে প্রস্তুত। এই সফর সফল হলে নিরাপত্তা চুক্তি, প্রযুক্তি স্থানান্তর এবং ব্যাপক বিনিয়োগে নতুন দ্বার খুলে যেতে পারে।


প্রশ্ন ১: ট্রাম্প কোন দেশগুলো সফর করছেন? 

উত্তর: সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। 

প্রশ্ন ২: সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে কী চায়? 

উত্তর: নিরাপত্তা চুক্তি, পারমাণবিক প্রকল্পে অনুমোদন ও অস্ত্র চুক্তি। 

প্রশ্ন ৩: কাতারের সঙ্গে কি নতুন চুক্তি হচ্ছে? 

উত্তর: আল-উদাইদ ঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি বৃদ্ধি ও একটি Boeing 747-8 উপহার দেওয়া।

 প্রশ্ন ৪: আমিরাত সফরের মূল আলোচ্য বিষয় কী? 

উত্তর: চিপ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা ও ১.৪ ট্রিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ পরিকল্পনা।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.